শর্ট টার্ম মেমরি লস প্রতিরোধের ৬টি উপায়
সারারাত পড়ে পরীক্ষার হলে গিয়ে পড়া ভুলে যাওয়া, এই মাত্র
পরিচিত হওয়া ব্যক্তির নামটি
হাজার চেষ্টা করেও মনে করতে না পারা অথবা কোন বিশেষ কাজ করার জন্য মনস্থির করে
রুমে গিয়ে সেই কাজটির কথাই বেমালুম ভুলে যাওয়া ইত্যাদি আমাদের কাছে খুবই পরিচিত
সমস্যা। এভাবে ভুলে যাওয়ার সমস্যাকে বলা হয় শর্ট টার্ম মেমরি লস বা অল্পতেই ভুলে
যাওয়া।
দারুণ সব লেখা পড়তে ও নানা বিষয় সম্পর্কে
জানতে ঘুরে এসো আমাদের ব্লগের নতুন পেইজ থেকে!
শর্ট টার্ম মেমরি লস কী:
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে আমাদের মেমরি তৈরীর প্রক্রিয়া সাধারণত তিনটি ধাপে হয়ে থাকে: সেনসরি, শর্ট টার্ম, এবং লং টার্ম।
সেনসরি মেমরি খুবই ক্ষণস্থায়ী। এটি শুধুমাত্র প্রায় একটি ছবি,
শব্দ, বা অন্যান্য সংবেদন বজায় রাখার জন্য অনুমতি দেয়। সেনসরি মেমরির কিছু তথ্য
শর্ট টার্ম মেমরি সংরক্ষণ করে এবং কিছু তথ্য মেমরি থেকে বিলীন হয়ে যায়। একে আমরা
ভুলে যাওয়া বা ফরগেটিং বলে থাকি। একে মেমরি লসও বলা যায়।
লং টার্ম মেমরিতে অসংখ্য
তথ্য অনেকদিন পর্যন্ত থাকে। তাই এই ধাপে মেমরি লস খুব কম হয়ে থাকে।
ঘুরে আসুন: স্মৃতিশক্তিকে বশে আনার দারুণ ৫টি হাতিয়ার!
শর্ট টার্ম মেমরি মূলত ১৫-৩০ সেকেন্ড মেমরি হিসেবে স্থায়ী হয়।
এরপর তথ্যগুলো কার্যকরী মেমরিতে (working memory) যায়। কার্যকরী মেমরি সাধারণত ৮০ মিনিট স্থায়ী হয়।
লংটার্ম মেমরিতে তথ্যগুলোকে একত্র করতে আমরা যদি আমাদের মস্তিষ্ককে
যথাযথ কারণ না দিতে পারি তবে তা কার্যকরী মেমরি
হতে মুছে যায়। শর্ট টার্ম মেমরিতে কোন তথ্যগুলো আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন তা
বাছাই করা হয়। শুধুমাত্র যে তথ্যগুলো আমরা পুনরাবৃত্তি করব সেগুলোই কার্যকরী
মেমরিতে যায়।
ধরা যাক, আমি একটি ফোন নাম্বার মনে রাখব। যখন আমি নম্বরটি দেখব তখন
এটি ক্ষণস্থায়ী মেমরি হিসেবে জমা হয়। যতক্ষণ না আমি নাম্বারটি কোথাও লিখে রাখব
অথবা এর পুনরাবৃত্তি করব ততক্ষণ পর্যন্ত এটি শর্ট টার্ম মেমরিতে থাকবে। এটা খুবই
অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। এরপর এক সময় তা মেমরি থেকে বিলীন হয়ে যায়, যাকে
আমরা বলি শর্ট টাইম মেমরি লস।
গবেষকদের মতে শর্ট টার্ম মেমরির স্মৃতিধারণ ক্ষমতা
বাড়ানো সম্ভব। এর জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। তাহলে জেনে নেয়া যাক সেই নিয়মগুলো:
১। সঠিক খাদ্যতালিকা
মেনে চলা:
কিছু কিছু খাবার শর্ট টার্ম মেমরির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য
করে। এরকম কিছু খাবার হচ্ছে:
চকলেট: সম্প্রতি হার্ভার্ড মেডিকেলের
এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে দুই কাপ পরিমান হট চকলেট মস্তিষ্কের দ্রুত রক্ত
সঞ্চালনে সাহায্য করে এবং মেমরির কার্যক্ষমতা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে।
ক্যাফেইন: প্রতিদিন এক কাপ কফি শর্ট টার্ম মেমরি লস
অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
পর্যাপ্ত পরিমান পানি: শর্ট
টার্ম মেমরি লস এর অন্যতম কারণ হল ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। তাই দিনে ৭-৮ গ্লাস
পানি পান করতে হবে।
এছাড়া খাদ্যতালিকায় চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে কারণ চিনি
মস্তিষ্কে গ্লুকোজ এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা শর্ট টার্ম মেমরিতে প্রভাব ফেলে।
২। চাই সঠিক নিদ্রা:
ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পরিমাণ
ঘুম না হলে মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা
হ্রাস পায়। ঘুমের সময় মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না যা শর্ট টার্ম মেমরিতে
তথ্য বেশি সময় স্থায়ী রাখতে সাহায্য করে।
৩। নিয়মিত ব্যায়াম
করা:
মস্তিষ্ককে সুস্থ এবং কার্যকর রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও অনুশীলন
করা প্রয়োজন।
ঘুরে আসুন: মনোযোগ বাড়াতে পারে যে ১০টি অনুশীলন!
৪। মেডিটেশন ও
প্রার্থনা করা:
নিয়মিত প্রার্থনা বা মেডিটেশন কোন
জিনিসের প্রতি ফোকাস বা দৃষ্টিক্ষমতা বৃদ্ধি করে যার ফলে মেমরি লস কম হয়।
শর্ট টার্ম মেমরিতে কোন তথ্যগুলো আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন তা বাছাই
করা হয়
৫। একই সময়ে একাধিক
কাজ না করা:
একই সময়ে একাধিক কাজ করলে শর্ট টার্ম মেমরি কোনটি মেমরিতে রাখবে
এবং কোনটি মুছে ফেলবে তা বুঝতে পারে না। ফলে মেমরি লস হয়।
১০ মিনিট স্কুলের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য আয়োজন
করা হচ্ছে অনলাইন
লাইভ ক্লাসের! তা-ও
আবার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে!
৬। Distraction থেকে দূরে থাকা:
Distraction শর্ট টার্ম মেমরি লস-এর প্রধান কারণ। যেসব কাজ
মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায় সেগুলোকেই বলা হয় Distraction। Distraction থেকে দূরে থাকলে শর্ট টার্ম মেমরি লস অনেকটাই
কমবে।
আশা করছি এই ৬টি উপায় মাথায় রাখলে শর্ট টার্ম মেমোরি লস থেকে
অনেকটাই দূরে থাকতে পারবে তোমরা!
0 comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.